সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন কী ধরনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন এমন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেখানে একদিকে ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট না হয়, অন্যদিকে কোন নির্দিষ্ট কাজ বা অধিকার বা সম্পত্তি পুনরুদ্ধার আইনত বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। এই আইন সাধারণত নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে প্রযোজ্য:
- চুক্তির সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন
যেখানে পক্ষগুলো চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য, কিন্তু এক পক্ষ অন্য পক্ষের পক্ষ থেকে কাজটি সম্পাদন করেনি। আদালত সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নের জন্য আদেশ দিতে পারে (ধারা ১২-১৯)। - সম্পত্তির দখল পুনরুদ্ধার
যদি কোনো ব্যক্তি অবৈধভাবে অন্যের সম্পত্তি দখল করে থাকে, তবে সেই সম্পত্তির মালিক আদালতের মাধ্যমে তার দখল পুনরুদ্ধার করতে পারেন (ধারা ৮-১০)। - নিষেধাজ্ঞা আদেশ
যদি কোনো পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকলাপ বা কাজ করার জন্য বাধ্য হয় এবং তা তার আইনগত অধিকার ভঙ্গ করে, তাহলে আদালত নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে, যাতে এটি না করা হয় (ধারা ৫২-৫৭)। - দলিল সংশোধন বা বাতিল
যদি কোনো দলিলের মধ্যে ভুল বা অসম্পূর্ণতা থাকে এবং সেটি সংশোধন করা প্রয়োজন হয়, তবে আদালত সংশোধন বা বাতিল করার আদেশ দিতে পারে (ধারা ৩১-৩৯)। - ঘোষণামূলক প্রতিকার
যদি কোনো পক্ষ নিজের অধিকার নিয়ে আইনি জটিলতায় পড়ে থাকেন, আদালত সেই অধিকার বা অবস্থান ঘোষণা করতে পারে (ধারা ৪২)।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন কী ধরনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়?
এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য নয়, যেমন:
- ধার্য ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে
যখন ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট হয় এবং অন্য কোনো আইনি প্রতিকার, যেমন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার প্রয়োজন হয় না (ধারা ৭)। - ক্রিমিনাল (দণ্ডনীয়) আইন
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন কোনো ধরনের ক্রিমিনাল বা দণ্ডমূলক আইন প্রয়োগে ব্যবহৃত হতে পারে না, যেমন ধর্ষণ বা খুনের মতো অপরাধমূলক কাজে (ধারা ৭)। - অথরিটি বা ক্ষমতা সীমিত হলে
কোনো চুক্তি, দলিল বা আইন যদি কোনো পক্ষের ক্ষমতা বা অধিকার সীমিত করে, বা তার বিরুদ্ধে আদালত কোনো সুনির্দিষ্ট আদেশ দিতে না পারে, তবে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের প্রয়োগ হবে না (ধারা ২১)। - অ্যাগ্রিমেন্ট যেখানে আর্থিক ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট
যদি কোনো চুক্তি সম্পাদন না করার ফলে পরবর্তীতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট হয়ে থাকে, তবে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার প্রযোজ্য হবে না (ধারা ২১)। - স্বাক্ষরিত চুক্তির সংশোধন বা বাতিল
যদি কোনো চুক্তি রেজিস্ট্রেশন বা অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে স্বাক্ষরিত হয়, তবে সুনির্দিষ্ট কার্যকর বা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় (ধারা ২১ক)। - চুক্তির জটিলতা
যদি চুক্তি সম্পাদন এত জটিল হয় যে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে না (ধারা ২১)।
উপসংহার:
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন এমন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যেখানে এক পক্ষ অন্য পক্ষের অধিকার বা সম্পত্তি খর্ব করে এবং ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট নয়, বা যেখানে চুক্তি, দলিল বা অন্যান্য আইনি ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার প্রয়োজন হয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে যেমন ক্রিমিনাল আইন, এবং যখন ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট, তখন এই আইন প্রযোজ্য হবে না।