ধারা ২৩: চলমান লঙ্ঘন ও অবৈধ কার্যকলাপের ক্ষেত্রে তামাদি সময়

🔹 ভূমিকা

তামাদি আইন, ১৯০৮-এর ধারা ২৩ নির্ধারণ করে যে, যদি কোনো চুক্তি লঙ্ঘন বা অন্য কোনো বেআইনি কাজ চলমান থাকে, তবে তামাদি সময় প্রতিটি মুহূর্তে নতুনভাবে গণনা শুরু হবে।

📌 এর অর্থ:
একটি চুক্তিভঙ্গ চলমান থাকলে, প্রতিটি দিন নতুন করে তামাদি সময় গণনার সুযোগ তৈরি হবে।
যদি কারও বিরুদ্ধে চলমান বেআইনি কাজ (Continuing Wrong) করা হয়, তবে যতদিন সেই বেআইনি কাজ চলবে, ততদিন নতুন করে তামাদি সময় শুরু হবে।


🔹 ধারা ২৩-এর মূল বিধান

📜 (১) চলমান চুক্তি লঙ্ঘন (Continuing Breach of Contract)

যদি কোনো পক্ষ ধারাবাহিকভাবে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করতে থাকে, তবে তামাদি সময় প্রতিদিন নতুন করে শুরু হবে।

📌 উদাহরণ:
🔹 একটি ব্যক্তি তার বাড়ি ভাড়া দিয়েছে, কিন্তু ভাড়াটিয়া চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসের ভাড়া পরিশোধ করছে না।
🔹 যদি ভাড়াটিয়া প্রতিনিয়ত ভাড়া দিতে ব্যর্থ হয়, তবে প্রতিবার ভাড়া না দেওয়ার দিন থেকে নতুন করে তামাদি সময় শুরু হবে।

📜 (২) চলমান বেআইনি কার্যকলাপ (Continuing Wrong)

যদি কারও বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অন্যায় বা বেআইনি কার্যকলাপ চলতে থাকে, তবে প্রতিদিন নতুন করে তামাদি সময় গণনা হবে।

📌 উদাহরণ:
🔹 কোনো ব্যক্তি অন্যের জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে।
🔹 যতদিন জমি দখল করে রাখা হবে, ততদিন নতুন করে তামাদি সময় গণনা শুরু হবে।
🔹 অর্থাৎ, জমির মালিক যেকোনো সময় মামলা করতে পারবে, কারণ বেআইনি দখল এখনও চলমান রয়েছে।


🔹 ধারা ২৩-এর প্রয়োগ ক্ষেত্র

(১) চুক্তিভঙ্গ সংক্রান্ত মামলা
➡ যদি কোনো ব্যক্তি চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং এটি চলমান থাকে, তবে প্রতিটি লঙ্ঘনের জন্য নতুন করে তামাদি সময় শুরু হবে।

(২) সম্পত্তি সংক্রান্ত বেআইনি কাজ
➡ যদি কেউ অবৈধভাবে সম্পত্তি দখল করে রাখে বা অন্য কোনোভাবে কারও অধিকারে হস্তক্ষেপ করে, তবে যতদিন সেই দখল বা হস্তক্ষেপ চলবে, ততদিন নতুন করে তামাদি সময় গণনা হবে।

(৩) সরকারি বা ব্যক্তিগত অবিচার ও অধিকার লঙ্ঘন
➡ যদি কারও মৌলিক অধিকার বা আইনগত অধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তবে প্রতিটি মুহূর্তেই নতুন করে তামাদি সময় শুরু হবে।


🔹 ধারা ২৩-এর উপকারিতা

(১) অবিচার চলতে থাকলে আইনি প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ বজায় থাকে।
(২) চুক্তি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ নতুন তামাদি সময় পায়।
(৩) বেআইনি দখল বা সম্পত্তির অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধ করা যায়।


🔹 উপসংহার

📌 ধারা ২৩-এর সারসংক্ষেপ:
যদি চুক্তিভঙ্গ চলমান থাকে, তবে প্রতিটি লঙ্ঘনের জন্য নতুন তামাদি সময় গণনা হবে।
যদি বেআইনি কার্যকলাপ অব্যাহত থাকে, তবে যতদিন তা চলবে, ততদিন নতুন করে তামাদি সময় গণনা শুরু হবে।
এই বিধান আইনি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য সুবিচারের সুযোগ দেয়।